সম্প্রতি অনলাইনে এমন একটি বোমা তৈরির স্কুলের সন্ধান পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশের জঙ্গি প্রতিরোধে বিশেষায়িত ইউনিট-কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। বোমা তৈরির ওই প্রশিক্ষককে গ্রেপ্তারে শুরু হয়েছে অভিযান।
সিটিটিসির কর্মকর্তারা বলছেন, ধারাবাহিক অভিযানে কোণঠাসা নব্য জেএমবি আবার নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। তুরস্ক থেকে মাহাদী হাসান জন ওরফে আবুল আব্বাস আল বাঙ্গালি পরিচয়ে এক জঙ্গি আমীর হিসেবে নব্য জেএমবিকে সংগটিত করছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টার্গেট করে তারা এখন সংগঠনের সব সদস্যদের বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে জাহিদ ওরফে ফোরকান গোপনে একটি অনলাইন স্কুল তৈরি করেছে। সংগঠনের সামরিক শাখার সদস্যদের সেখানে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।
সিটিটিসির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার রহমত উল্লাহ চৌধুরী সুমন বলেন, ‘অনলাইনে বোমা তৈরির স্কুল পরিচালনা করছে জঙ্গিরা, এমন তথ্যের ভিত্তিতে নজরদারি শুরু করা হয়। প্রযুক্তিগত তথ্য ও আগে গ্রেপ্তার হওয়া জঙ্গিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা বোমা তৈরির অনলাইন স্কুলের সত্যতা পান। পরে এই স্কুলের প্রশিক্ষককে গ্রেপ্তারের জন্য তার বিস্তারিত নাম-পরিচয় সংগ্রহ শুরু করেন।’
সিটিটিসি সূত্র জানায়, অনলাইনে বোমা তৈরির স্কুল পরিচালনাকারী জাহিদ হাসান ওরফে ফোরকান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময় থেকেই সে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরকের নানা উপকরণ নিয়ে পড়াশুনা করে এবং অনলাইনে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেই বোমা তৈরির দক্ষ কারিগর হয়ে ওঠে। এরপর সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে সে নিজেই বোমা তৈরির স্কুল পরিচালনা শুরু করে।
সিটিটিসির একজন কর্মকর্তা জানান, জাহিদ ওরফে ফোরকান এনক্রিপ্টেড বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে সংগঠনের সহযোগী সদস্যদের কাছে প্রথমে বোমা তৈরির ম্যানুয়াল পাঠিয়ে দিতো। তারপর সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ভিডিও কলে হাতে-কলমে শেখাতো। তার তৈরি করা বোমা বা আইইডি (ইমপ্রোভাইজ এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের একটি পুলিশ বক্স থেকে উদ্ধার করা হয়।