ছাতক প্রতিনিধিঃ
দেশের বোরো ফসলের অন্যতম যোগানদাতা সুনামগঞ্জ। কার্যাদেশ অনুযায়ী হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ সঠিক সময়ে সম্পন্ন না হওয়ায় একের পর এক তলিয়ে যাচ্ছে সুনামগঞ্জের হাওর, ম্রিয়মান হচ্ছে ১৩ লক্ষ মেট্রিক টন ফসল উৎপাদনের আশা।
গত ২ এপ্রিল তাহিরপুর উপজেলার বাঁধ ভেঙে টাঙ্গুয়ার হাওর তলিয়ে যায়, ৪ এপ্রিল তলিয়ে যায় শাল্লা, ছাতক ও সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার কয়েকটি হাওর। ৫ এপ্রিল বিকেলে ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্র সোনার তাল হাওরটি তলিয়ে যায়।
কৃষকের ফসল রক্ষার দাবিতে আজ বুধবার (০৬ এপ্রিল) দুপুরে সিলেটের হাওর বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মলনে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পাঠ করেন হাওর বাঁচাও আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলা কমিরি কার্যকরি সভাপতি ওলিউর রহমান চৌধুরী বকুল। বক্তারা বলেন, কাবিটা স্কীম প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত কমিটি সুনামগগঞ্জ জেলার ৪১ টির অধিক হাওরে ৭২৭ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির মাধ্যমে ১শ ২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ শুরু হয়ে ২০২২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন বাঁধেরই কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়নি।
বাঁধ নির্মাণে দূর্নীতির অভিযোগ তুলে বক্তারা বলেন, শত কোটি টাকার অধিক প্রকল্পে নেই কোন মনিটরিং, নেই কাজের গুণগতমান বজায়ের চেষ্টা। কাজের শুরু থেকেই দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও দের বিরুদ্ধে। তাদের দুর্নীতির কারণেই বাঁধের কাজের মান ভাল হয়নি। তাই সামান্য বৃষ্টিতেই বাঁধভেঙ্গে হাওরে পানি প্রবেশ করছে।
প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে বক্তারা বলেন, নির্মাণাধীন বাঁধের কাজ দ্রুত শেষ করা হোক। নদীতে বাঁধ দিয়ে কোনো লাভ নেই, বাঁধ দিতে হবে খালে। দূর্নীতি ও লুটপাটের স্বার্থে অপ্রয়োজনীয় বাঁধ দেয়া হয়েছে। এখনো দ্রুতগতিতে কাজ শেষ করলে অনেক ফসল রক্ষা করা সম্ভব। নতুবা কৃষকদের সর্বনাশ হয়ে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, ছাতক উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সেক্রেটারী সাকির আমিন, ছাতক উপজেলা কমিটির সভাপতি সমরুজ আলী মেম্বার, যুগ্ম সম্পাদক পঙ্কজ দত্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক কাউছার আহমদ ও দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়ন কমিটির আহবায় তাজুল ইসলাম সহ সিলেটে কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দ ও স্থানীয় প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।##