বিশেষ প্রতিবেদন:
পর্যটন ভূমি হিসেবে পরিচিত সিলেটের জাফলং পর্যটকদের কাছে বিশেষ আকর্ষণ। যেকোন পর্যটক সিলেটে বেড়াতে এলেই তাদের কাছে আকর্ষণীয় পিকনিক স্পট হিসাবে শ্রীপুর জাফলং খুবই জনপ্রিয়।
তাই প্রকৃতি প্রেমীরা সুযোগ পেলেই ছুটে আসেন সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকার জাফলং- শ্রীপুরে। যা সিলেটের জৈন্তাপুর থানাধীন এলাকার অন্তর্গত। আর এই সিলেট-তামাবিল মহাসড়কে প্রতিদিনই চলাচল করে বালু, পাথর, কয়লা বোঝাই পণ্যবাহী গাড়ি সহ পর্যটকদের প্রায় হাজার খানেক যানবাহন।
তার মধ্যে প্রতিদিন তিন থেকে চারশত ভারত থেকে আমদানিকৃত বালু, পাথর, কয়লা বোঝাই ট্রাক এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে। একাধিক গাড়ী চালকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, জৈন্তাপুর থানায় কর্মরত ট্রাফিক সার্জন পার্থর নির্দেশে প্রতিটি গাড়ী থেকে তার সহযোগী কনস্টেবল আলী ও তার সঙ্গীরা নিয়মিত একশত টাকা করে চাঁদা আদায় করেন।
প্রতি বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার উক্ত এলাকায় নামে পর্যটকদের ঢল। যার বেশিরভাগ পর্যটকরাই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন। আর এই পর্যটকবাহী গাড়ী চালকদের হয়রানির শিকার হতে হয় সার্জেন্ট পার্থর হাতে।
সার্জেন্ট পার্থর বেপরোয়া চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ সাধারন গাড়ী চালক থেকে শুরু করে পর্যটকরাও। পর্যটকবাহী গাড়ী চালকদের গাড়ী থামিয়ে সার্জেন্ট পার্থ কাগজপত্র যাচাই বাছাইয়ের নাম করে হাতিয়ে নেন মোটা অংকের টাকা।
গাড়ীর কাগজপত্র সবকিছু সঠিক থাকার পরও বিভিন্ন অজুহাতে চালকদের মামলার ভয় দেখিয়ে সার্জেন্ট পার্থ তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন। একাধিক পর্যটক ও ট্রাক চালকদের অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, সার্জেন্ট পার্থর নির্দেশে কনস্টেবল আলী ও তার সহযোগীদের দ্বারা হয়রানির শিকার হতে হয় গাড়ী চালকদের।
প্রতিটি পণ্যবাহী ট্রাক থেকে একশত টাকা করে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি একাধিক ট্রাক চালক প্রতিবেদকের নিকট অভিযোগ করেন। এই টাকা আদায়ের বিনিময়ে তাদের কাছে কোন রশিদ দেয়া হয় না।
সম্পূর্ণ অবৈধভাবে গাড়ী আটকিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজি চালিয়ে যাচ্ছেন জৈন্তাপুর থানায় কর্মরত ট্রাফিক সার্জেন্ট পার্থ। এখানেই অভিযোগই শেষ নয় পার্থর বিরুদ্ধে রয়েছে আরও ব্যাপক অভিযোগ।
সার্জেন্ট পার্থ নিয়মিত সময় কাটান হরিপুর বাজারে। ঐখানে বসেই তিনি বিভিন্ন গাড়ীতে সিস্টেম মামলা দিয়ে থাকেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, যেসব গাড়ীর কাগজপত্র নবায়ন করা হয়নি যেমন: ড্রাইভিং লাইসেন্স, ফিটনেস নেই এই সমস্ত গাড়ীর কাগজ মামলা বলে জব্দ আছে লিখা কেইস স্লিপ দিয়ে এ সমস্ত অবৈধ গাড়ীগুলোকে মোট অংকের টাকা বিনিময়ে রাস্তায় চলাচলের সুযোগ করে দেন সার্জেন্ট পার্থ।
এ সমস্ত অভিযোগের বিষয়ে জৈন্তাপুর থানায় কর্মরত ট্রাফিক সার্জেন্ট পার্থর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, সবই ঠিক আছে, এসব বিষয়ে মোবাইলে কথা না বলে আপনি একবার হরিপুর চলে আসুন। চা নাস্তা করে কথা বলা যাবে।
অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে পার্থর নির্দেশে চাঁদা আদায়কারী ট্রাফিক কনস্টেবল আলীর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, আপনার কথা সঠিক ,কিন্তু আমি এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দিতে পারব না। বিষয়গুলো আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত। আপনি তাদের সাথে যোগাযোগ করুন।
এ বিষয়ে জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, সার্জেন্ট পার্থ ট্রাফিক বিভাগের লোক। এই বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না। আপনি জেলার টি.আই সাহেবের সাথে যোগাযোগ করুন।
এই বিষয়ে সিলেট জেলা ট্রাফিকের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (টি.আই প্রশাসন) রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আপনার কাছ থেকে বিষয়টি অবগত হলাম। আমাদের এসপি স্যারের নির্দেশ যে, রাস্তায় এ ধরনের অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
-=চলমান প্রতিবেদন ।